- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সীমান্ত উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকৃত ১৩ জনের মধ্যে বেশিরভাগই রোহিঙ্গা মুসলিম, বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা।
মালয়েশিয়ান কোস্টগার্ডের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে লাংকাবি দ্বীপের উপকূলে। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। উদ্ধার অভিযান দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে এবং অনুসন্ধান এলাকা ১৭০ থেকে ২৫৬ বর্গনটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা জানিয়েছে, রোববার উদ্ধার করা এক নারীর মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে—তিনি একজন রোহিঙ্গা।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ৩০০ জন রোহিঙ্গা একটি বড় নৌকায় যাত্রা শুরু করেন। পরে তারা ছোট ছোট নৌকায় ভাগ হয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তাদেরই একটি নৌকা এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ১১ জন রোহিঙ্গা ও ২ জন বাংলাদেশি নাগরিক। বাকিদের অবস্থান এখনো অজানা বলে সোমবার জানিয়েছে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের একটি মুসলিম সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী, যাদের নাগরিকত্ব স্বীকৃতি দেয় না দেশটির সরকার। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের পর লাখো রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
তবে দীর্ঘদিনের অনিশ্চিত জীবন, কর্মসংস্থানের অভাব ও ভবিষ্যৎ সংকটের কারণে কিছু রোহিঙ্গা বিপজ্জনক সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ার দিকে রওনা দিচ্ছেন—যেখানে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের আশা করেন।
মালয়েশিয়ান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মানবপাচারকারীরা এসব যাত্রীর কাছ থেকে মাথাপিছু তিন হাজার ডলার পর্যন্ত আদায় করে থাকে। কিন্তু যে নৌকাগুলোয় তারা ওঠেন, সেগুলো সাধারণত ছোট, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, এবং পর্যাপ্ত পানি, খাবার বা টয়লেটের মতো মৌলিক সুবিধাও থাকে না।
প্রায়ই এসব নৌকা সমুদ্রে ভেসে আটকে যায়, অনেকে মৃত্যুবরণ করেন, আর কেউ কেউ উদ্ধার হলেও আটক বা ফেরত পাঠানো হয়। নিখোঁজদের জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হলেও, মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ অন্তত এক সপ্তাহ অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।