- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক। PNN
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে একটি থানায় জব্দকৃত বিস্ফোরক দ্রব্য হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত নয়জন নিহত এবং ৩০ জনের মতো আহত হয়েছেন। শুক্রবার গভীর রাতে শ্রীনগরের দক্ষিণাঞ্চলীয় নওগাম থানায় এ ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে কিছু মরদেহ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। ১০০ থেকে ২০০ মিটার দূরবর্তী বাড়ি থেকেও দেহাবশেষ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
নিহতদের অধিকাংশই পুলিশ সদস্য ও ফরেনসিক দলের সদস্য, যারা বিস্ফোরকগুলো পরীক্ষা করছিলেন। শ্রীনগর প্রশাসনের দু’জন কর্মকর্তাও বিস্ফোরণে মারা যান। গুরুতর আহত পাঁচজনের অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে পুলিশ জানিয়েছে, এটি সন্ত্রাসী হামলা নয়, বরং অত্যন্ত দুঃখজনক এক দুর্ঘটনা। ফরেনসিক ও পুলিশ টিম থানায় সংরক্ষিত বিস্ফোরক পরীক্ষা করার সময়ই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাটি এমন সময় ঘটল যখন এর কয়েক দিন আগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হন। ওই হামলাকে সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারত। এর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, যাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ভারতের দাবি অনুযায়ী, দিল্লির বিস্ফোরণে জড়িতদের সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-এ-মোহাম্মদ (জেইএম) এবং এর কাশ্মীরভিত্তিক সহযোগী আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ–এর যোগাযোগ রয়েছে। এ ঘটনার পর কাশ্মীরে অন্তত ৬৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে, যে নওগাম থানায় শুক্রবারের বিস্ফোরণ ঘটে, সেখানকার পুলিশ সম্প্রতি জেইএম প্রকাশিত হুমকিমূলক পোস্টার তদন্ত করছিল। তদন্তে উঠে আসে বিদেশি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যুক্ত “শ্বেতপোশাকধারী সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক”–এর তথ্য। তদন্তের সময় প্রায় ৩,০০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়, যা দিয়ে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল বলে ধারণা পুলিশের।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন শেষে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ চলছে। তিনটি যুদ্ধ ও বহু সংঘাতের পরও এ উত্তপ্ত এলাকার পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল।