- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক। PNN
তেলসমৃদ্ধ ও দীর্ঘদিন ধরে সুদান–দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিতর্কিত অঞ্চল আবিয়েতে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন শান্তিরক্ষা বাহিনী ইউএনআইএসএফএ (UNISFA)–র ম্যান্ডেট আরও এক বছর বাড়াল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ভোটে ১২ সদস্য পক্ষে ভোট দেয়, তবে রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান ভোটদানে বিরত থাকে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মিশনের কার্যক্রম নভেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত চলবে। তবে পরিষদ জানিয়েছে, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে অগ্রগতি না হলে ভবিষ্যতে ম্যান্ডেট আরও বাড়ানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত খসড়া প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে তোলে। প্রস্তাবিত প্রস্তাবে বলা হয়, মিশন অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজন “যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবসম্মত মানদণ্ড”, যা সুদান ও দক্ষিণ সুদানের বাস্তব অগ্রগতি দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।
প্রস্তাবে স্পষ্ট করা হয়, পরবর্তী নবায়নের জন্য দুই দেশের ওপর যৌথ পুলিশ বাহিনী গঠন এবং আবিয়ে অঞ্চলকে পুরোপুরি সামরিক-মুক্ত করার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চাপ থাকবে—যা তারা ২০১১ সালে দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার সময় মেনে নিয়েছিল।
বর্তমানে UNISFA–র ৪,০০০ সদস্যের পুলিশ ও সেনাবাহিনী স্থানীয় বেসামরিক জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ এবং মানবিক সহায়তা চলমান রাখার দায়িত্ব পালন করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ২০২৬ সালের আগস্টের মধ্যে পরিস্থিতির অগ্রগতি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদন দেখে নিরাপত্তা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে, মিশনের ব্যাপ্তি কমানো হবে কি না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ডরোথি শিয়া বলেন, “এই মানদণ্ডগুলো মিশনের কার্যকারিতা পরিমাপে সহায়তা করবে এবং দুই সরকারকে দায়বদ্ধ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
আবিয়ে অঞ্চলে শান্তিরক্ষা মিশন ছোট হলেও এটি অত্যন্ত রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল এলাকা। ঘনঘন সংঘর্ষ, হাজারো মানুষের বাস্তুচ্যুতি এবং অনিরাপদ সড়ক পরিস্থিতি মানবিক সহায়তাকে কঠিন করে তুলেছে। অন্যদিকে সুদান এখনো ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে বিদ্ধ, যা ২০২৩ সালের এপ্রিলে দুই সেনাশাখার ক্ষমতার লড়াই থেকে শুরু হয়।
এই অস্থিরতার মধ্যে সুদানের কুখ্যাত র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)–ও আবিয়েতে সক্রিয় রয়েছে, যারা দারফুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নৃশংসতা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত।