Tuesday, October 14, 2025

ট্রাম্পের পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন: মেদভেদেভের হুমকির জবাব


ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন (সংগৃহীতঃ জনাথন আরনস্ট/রয়টার্স)

নিউজ ডেস্ক | ২ আগস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের মধ্যে সাম্প্রতিক বাকযুদ্ধ চরম উত্তেজনার রূপ নিয়েছে। পারমাণবিক হুমকি এবং সাবমেরিন মোতায়েন নিয়ে এই বিবাদের জেরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে জানান, মেদভেদেভের "উসকানিমূলক বক্তব্য"-এর জবাবে তিনি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে “উপযুক্ত অঞ্চলে” স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, “আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে উপযুক্ত অঞ্চলে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি, যদি এই বোকামিপূর্ণ ও উসকানিমূলক বক্তব্যগুলো কথার চেয়ে বেশি কিছু হয়ে থাকে।”

এর আগের দিন, মেদভেদেভ সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্প যেন রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ পারমাণবিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকেন — যা একটি ঠান্ডা যুদ্ধ-কালীন স্বয়ংক্রিয় প্রতিশোধ ব্যবস্থা।

ট্রাম্প ও মেদভেদেভের মধ্যে এই বাকযুদ্ধ নতুন নয়। জুন মাসেও পারমাণবিক অস্ত্র এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে দু’জনের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে কথার লড়াই হয়। এবারও সেই লড়াই ফের ঘূর্ণি তুলেছে।

ট্রাম্প এই সপ্তাহে আরও বলেন, “রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় কোনো ব্যবসা নেই। আর থাকবেও না। মেদভেদেভ, এই ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট, যেন তার শব্দ বেছে ব্যবহার করে। সে এখন খুবই বিপজ্জনক অঞ্চলে পা দিচ্ছে!”

এর জবাবে মেদভেদেভ এক পোস্টে লিখেছেন, “যদি একজন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্টের কয়েকটি কথা যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টকে এতটাই বিচলিত করে তোলে, তাহলে বুঝতে হবে রাশিয়া ঠিক পথেই আছে।”

তিনি পরে জনপ্রিয় টিভি সিরিজ দ্য ওয়াকিং ডেড উল্লেখ করে বলেন, “ডেড ইকোনমি, ডেড হ্যান্ড, আর ট্রাম্পের প্রিয় ‘ওয়াকিং ডেড’ – মনে করিয়ে দিচ্ছে, ধ্বংস রাশিয়ার হাতেও রয়েছে।”

ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সক্রিয় হলেও, তার প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি। বরং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘একনায়ক’ আখ্যা দিয়ে এবং রাশিয়াকে ভূখণ্ড ছাড় দেয়ার মতো প্রস্তাব দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হন।

সম্প্রতি রাশিয়াকে ১০-১২ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, যদি আগ্রাসন বন্ধ না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ২৮ জুলাই কিয়েভে রাশিয়ার গোলাবর্ষণের প্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়ার যা করছে তা জঘন্য।”

মেদভেদেভ ট্রাম্পের ‘আল্টিমেটাম’কে ‘নাটকীয়’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “রাশিয়া এসব হুমকিকে গুরুত্ব দেয় না।” তার ভাষায়, “ট্রাম্প যেন ভুলে না যায়— রাশিয়া ইসরায়েল নয়, এমনকি ইরানও নয়। প্রতিটি নতুন আল্টিমেটাম যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়া একেকটি পদক্ষেপ।”

বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে, যেখানে ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান এবং বৈশ্বিক কূটনীতি টালমাটাল, সেখানে ট্রাম্প-মেদভেদেভের এমন পারমাণবিক বাকযুদ্ধ নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই পরাশক্তির নেতাদের এমন আচরণ কেবল উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতির দিকে ধাবিত করতে পারে বিশ্বকে।

তথ্যসুত্রঃ আল জাজিরা

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন