- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ভারতের আপত্তি ও উদ্বেগ সত্ত্বেও ব্রহ্মপুত্র নদীর উৎস তিব্বতের ‘ইয়ারলুং স্যাংপো’ নদীর ওপর বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চীন।
শনিবার (১৯ জুলাই) তিব্বতে নির্মিত বিশাল এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, প্রকল্পটি দেশটির কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অংশ এবং তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কৌশলের একটি বড় ধাপ।
চীন জানিয়েছে, এই প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে তিব্বত ছাড়াও চীনের অন্যান্য অঞ্চলে। এতে পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এবং প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ১৬৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
বাঁধটি সম্পূর্ণ হলে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ, যা বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ—ইয়াংসিকিয়াং নদীর ‘থ্রি গর্জেস ড্যাম’-কেও ছাড়িয়ে যাবে।
নদীটি তিব্বতে ‘ইয়ারলুং স্যাংপো’ নামে পরিচিত হলেও ভারত ও বাংলাদেশে এটি ‘ব্রহ্মপুত্র’ নামে পরিচিত। ফলে এই প্রকল্প নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ—দুই ভাটির দেশেই ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীনকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। দিল্লির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে, যেন নদীর উজানে কোনো কার্যকলাপের মাধ্যমে ভাটির দেশগুলোর স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়।
চীন অবশ্য আশ্বস্ত করেছে, এই প্রকল্পের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।
তবে পরিবেশবিদরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, তিব্বতের মতো একটি পরিবেশগতভাবে অতি সংবেদনশীল অঞ্চলে এত বড় অবকাঠামোগত প্রকল্প জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি প্রবাহ, কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা—সবকিছুই এ প্রকল্পের মাধ্যমে হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এমন এক সময়ে চীন এই প্রকল্প চালু করলো, যখন আঞ্চলিক জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় উদ্বেগ ও কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।