- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মঙ্গলবার তালেবানের দুই শীর্ষ নেতা - সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানি - এর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের ওপর লিঙ্গভিত্তিক নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর নিশ্চিত করেছে।
আদালতের বিচারকরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে নারীদের বিরুদ্ধে অব্যাহত নিপীড়নের সঙ্গে হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং আবদুল হাকিম হাক্কানি সরাসরি যুক্ত বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আদালত আরও বলেছে যে, যদিও তালেবান সমগ্র জনগণের উপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তবে তারা বিশেষভাবে নারী ও কিশোরীদের টার্গেট করেছে – শুধু নারী হওয়ার কারণে। এর মাধ্যমে তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বিচারকদের মতে, তালেবান নারীদের শিক্ষা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, পারিবারিক জীবন, চলাফেরার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তা, বিবেক ও ধর্ম পালনের অধিকার কঠোরভাবে হরণ করেছে। এছাড়াও, যেসব মানুষ লিঙ্গ পরিচয়ের দিক থেকে তালেবানের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে অমিল, তারাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
আলোচ্য অপরাধসমূহের সময়কাল হিসেবে ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট (যেদিন তালেবান ক্ষমতা দখল করে) থেকে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। তালেবানরা যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা নিষিদ্ধকরণ; এনজিও ও অন্যান্য সংস্থায় নারীদের কাজ নিষিদ্ধকরণ; সরকারি চাকরি থেকে বহিষ্কার; সৌন্দর্যচর্চা কেন্দ্র, পার্ক, ব্যায়ামাগার নারীদের জন্য বন্ধ করা; পুরুষ অভিভাবক ছাড়া দূরে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা; এবং নারীদের প্রকাশ্যে গান গাওয়া, কবিতা আবৃত্তি, কণ্ঠস্বর ও দেহের প্রকাশ নিষিদ্ধ করা।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আদালতের প্রধান কৌঁসুলি করিম খান এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য আবেদন করেন। তিনি তখন বলেছিলেন যে আফগান নারী, কিশোরী এবং এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায় অতুলনীয় ও নিষ্ঠুর নিপীড়নের শিকার, যা তালেবানের নীতিরই ফল। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে আরও তালেবান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে।