- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক। PNN
তাইওয়ানকে ঘিরে পূর্ব এশিয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে জাপানের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন পরিকল্পনা। এর কড়া প্রতিক্রিয়ায় চীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে তাইওয়ানের পক্ষে কোনো বিদেশি শক্তি হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলে তা শক্ত হাতে দমন করা হবে।
বুধবার বেইজিংয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের তাইওয়ানবিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র পেং চিনগেন বলেন, “আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীনের দৃঢ় সংকল্প, ইচ্ছাশক্তি ও সক্ষমতা রয়েছে। বিদেশি হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রয়াস চীনের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।”
জাপানের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলীয় দ্বীপ ইয়োনাগুনিতে মধ্য-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। দ্বীপটি তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং ২০১৬ সাল থেকে সেখানে জাপানের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেশটির প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে এবং সম্ভাব্য আক্রমণের ঝুঁকি কমাবে। তিনি পরিষ্কার করে বলেন, স্থাপন করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিরক্ষামূলক এবং জাপানের আকাশসীমায় প্রবেশকারী শত্রুপক্ষের ড্রোন বা বিমান প্রতিহত করতেই ব্যবহৃত হবে।
এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাপানের সিদ্ধান্তকে “ইচ্ছাকৃত উসকানি” বলে উল্লেখ করেছে। চীনের দাবি, টোকিওর এমন পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে এবং সামরিক উত্তেজনা বাড়াবে।
তাইওয়ান অবশ্য জাপানের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে। দ্বীপটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া উ বলেন, “জাপানের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি তাইওয়ান প্রণালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। জাপান কখনোই তাইওয়ানের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন নয়। তাই এই উদ্যোগ আমাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”
এই পরিস্থিতির মাঝে বুধবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই চিং-তেও ঘোষণা দেন চীন থেকে বাড়তে থাকা হুমকি মোকাবিলায় প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা বাজেট বরাদ্দ করা হবে। ২০২৬ থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত আট বছরে এ বাজেট কার্যকর হবে।
লাই বলেন, “ইতিহাস প্রমাণ করেছে আক্রমণের মুখে আপস করতে গেলে দাসত্ব ছাড়া আর কিছুই মেলে না। তাইওয়ানের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা কখনোই পিছু হটব না।”
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েলিংটন কু জানান, নতুন বাজেটের অর্থ প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল কেনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ উন্নয়ন ও সরঞ্জাম সংগ্রহে ব্যবহার করা হবে।
চীন অবশ্য তাইওয়ানের এ ব্যয়কে অপচয় বলে মন্তব্য করেছে। পেং চিনগেন বলেন, “এভাবে অস্ত্র কিনে বিদেশি শক্তির তোষণ করার মাধ্যমে তাইওয়ান নিজেই নিজেদের আরও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
এদিকে উত্তেজনার মধ্যেই জাপান দাবি করেছে, ইয়োনাগুনির আকাশসীমার কাছে তারা চীনা ড্রোন উড়তে দেখেছে এবং সে কারণে জরুরি ভিত্তিতে সামরিক বিমান উড়ানো হয়েছে।