- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
PNN নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক |
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের উদয়পুরে স্ত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার অপরাধে কিশানদাস নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিচারক রাহুল চৌধুরী এই ঘটনাকে “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ” আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি বিরলতম অপরাধের মধ্যে পড়ে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, নিহত লক্ষ্মীকে তার স্বামী নিয়মিতই গায়ের রঙ নিয়ে অপমান করতেন। বিয়ের এক বছরের মাথায়, ২০১7 সালের ২৪ জুন রাতে কিশানদাস তাকে একটি বোতল দেখিয়ে বলেন, এর ভেতরে এমন ওষুধ আছে যা ত্বক ফর্সা করবে। পরে ওই তরল পদার্থ শরীরে মাখিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও মৃত্যুর আগে লক্ষ্মী পুলিশের কাছে, চিকিৎসকদের কাছে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন।
বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, কিশানদাস শুধু স্ত্রীর বিশ্বাস ভঙ্গ করেননি, বরং ভয়াবহ নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন। “এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না”—বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি দিনেশ পালিওয়াল এই রায়কে “ঐতিহাসিক” আখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি সমাজের জন্য শিক্ষা হিসেবে কাজ করবে। তরুণী লক্ষ্মী কারও বোন, কারও মেয়ে ছিলেন। আমাদের মেয়েদের বাঁচাতে না পারলে আমরা ব্যর্থ হব।”
যদিও আসামিপক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন, ঘটনাটি দুর্ঘটনা এবং কিশানদাসকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
ভারতে বহুদিন ধরেই ত্বকের রঙ নিয়ে বৈষম্য ও গায়ের রঙ ফর্সা করার ক্রিমের ব্যবসা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। রায়ের মাধ্যমে আবারও আলোচনায় এসেছে সমাজে প্রচলিত এই কুসংস্কার ও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি, যা অসংখ্য নারীর জীবনকে বিপন্ন করছে।