- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
মাঠে তখন নিঃশব্দ উত্তেজনা, ঘড়ির কাঁটা শেষ মুহূর্তে। স্কোরলাইন ২-২ সমতায়। বাংলাদেশের সমর্থকেরা দম বন্ধ করে তাকিয়ে—হবে কি জয়, নাকি শেষ মুহূর্তে হতাশা? এমন সময় বাঁ দিক থেকে উমেলা মারমার নিখুঁত ক্রস, আর বক্সের ভেতরে দৌড়ে এসে অসাধারণ শটে বল জালে জড়ালেন তৃষ্ণা রানী চাকমা। সেই গোলেই মিলল কাঙ্ক্ষিত তিন পয়েন্ট। উল্লাসে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের ডাগআউট, উড়ল বিজয়ের পতাকা।
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে দুর্দান্তভাবে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। ম্যাচে দুই দলেরই একজন করে খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেন—বাংলাদেশের পক্ষে ইনফর্ম স্ট্রাইকার মোসাম্মৎ সাগরিকা এবং নেপালের একজন।
যদিও গ্রুপের বাকি তিন দল বাংলাদেশকে ফেবারিট হিসেবে দেখছে, নেপাল ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে লড়াকু মনোভাবের ইঙ্গিত দিয়েছিল। মাঠে সেই ঘোষণা সত্যি প্রমাণ করে তারা। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে নেপাল। তবে শেষ মুহূর্তের ধাক্কায় জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
ম্যাচের শুরুতেই গোলের সম্ভাবনা তৈরি করে বাংলাদেশ। স্বপ্না রানীর নেওয়া কর্নার থেকে মুনকি আক্তারের হেড আফঈদা খন্দকারের গায়ে লাগলে বল সাগরিকার সামনে পড়লেও, ঠিকভাবে শট নিতে না পারায় গোলের সুযোগ মিস হয়। এরপর ১১তম মিনিটে একেবারে কাছাকাছি থেকে বাংলাদেশ গোল খেয়ে বসতে পারতো। শান্তি মার্ডির ব্যাক পাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে গোলরক্ষক স্বর্ণার শট নেপালের সুপ্রিয়ার গায়ে লেগে পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
১৪তম মিনিটে সিনহা জাহান শিখার গোলে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর ৩৭ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে ২-০ করেন সাগরিকা। শান্তি মার্ডির ক্রস থেকে পরপর দুই শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে তৃতীয় প্রচেষ্টায় বল জালে পাঠান আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় নেপাল। একে একে দুই গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায় তারা। কিন্তু শেষ শব্দটা যেন লেখা ছিল বাংলাদেশের জন্যই—তৃষ্ণা রানীর অসাধারণ ফিনিশিংয়ে নিশ্চিত হয় জয়।
কাঠমান্ডুর কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ছিল উত্তেজনায় ঠাসা ও সমানে-সমান লড়াইয়ের এক নিদর্শন। প্রথমার্ধে আধিপত্য দেখালেও দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষ হাসি হেসেছে লাল-সবুজের মেয়েরাই।
বাংলাদেশ দল গ্রুপপর্বে এখনো তিনটি ম্যাচ বাকি আছে—১৫ ও ১৭ জুলাই ভুটানের বিপক্ষে এবং ১৯ জুলাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ২১ জুলাই আবারও নেপালের মুখোমুখি হবে আফঈদাদের দল।