Friday, December 5, 2025

পূর্ব সাগরে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, উত্তেজনা বাড়ছে কোরীয় উপদ্বীপে


ছবিঃ সিউল রেলওয়ে স্টেশনের একটি টিভি পর্দায় ২০২৫ সালের ৭ নভেম্বর উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের খবর প্রদর্শিত হচ্ছে। (সংগৃহীত । আল জাজিরা । এপি)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN 

উত্তর কোরিয়া আবারও এক বা একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে উৎক্ষেপিত স্বল্প-পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পূর্ব সাগর বা জাপান সাগরের দিকে গিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটল এমন এক সময়, যখন মাত্র কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ বার্ষিক নিরাপত্তা বৈঠকে অংশ নিতে সিউল সফর করেছিলেন।

জাপান সরকারও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের তথ্য নিশ্চিত করেছে। তাদের মতে, এটি জাপানের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে সাগরে পড়েছে এবং কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া অভিযোগ করেছিল, উত্তর কোরিয়া পশ্চিম সাগরে অন্তত ১০ রাউন্ড গোলাবর্ষণ করেছে। এর মাত্র কয়েক দিন পরেই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল পিয়ংইয়ং।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়াকে নিজস্ব পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরির অনুমতি দিয়েছেন, যা দেশটির নৌবাহিনীর সক্ষমতায় বড় পরিবর্তন আনবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং জানিয়েছেন, তারা এই সাবমেরিনের জ্বালানির জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পাওয়ার আশা করছে।

যদিও ট্রাম্প ও লি উভয়েই এ বছর ক্ষমতায় আসার পর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সংলাপ পুনরায় শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, কিম এখনো সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যর্থ আলোচনার পর থেকে কিম কোনো নতুন কূটনৈতিক উদ্যোগে আগ্রহ দেখাননি।

গত সেপ্টেম্বর কিম ঘোষণা দেন, তাঁর দেশ “অপরিবর্তনযোগ্যভাবে পারমাণবিক রাষ্ট্র” এবং আলোচনায় ফিরতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই নিরস্ত্রীকরণের দাবি প্রত্যাহার করতে হবে।

সম্প্রতি পিয়ংইয়ংয়ে উত্তর কোরীয় ও রুশ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, উভয় দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেছে।

রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর গোরেমাইকিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ওই বৈঠকে অংশ নেয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএস জানিয়েছে, তারা উত্তর কোরিয়ায় সামরিক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের নতুন কার্যক্রম শনাক্ত করেছে, যা রাশিয়ায় সেনা পাঠানোর প্রস্তুতির ইঙ্গিত হতে পারে।

তাদের হিসাব অনুযায়ী, পিয়ংইয়ং ইতোমধ্যে প্রায় ১৫,০০০ সেনা রাশিয়ায় পাঠিয়েছে, যাদের অনেকেই ইউক্রেন যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া, প্রায় ৫,০০০ সামরিক নির্মাণকর্মীও রাশিয়ায় অবকাঠামো পুনর্গঠনে কাজ করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপ কোরীয় উপদ্বীপে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন