Friday, December 5, 2025

অস্ট্রেলিয়া-ইন্দোনেশিয়া ‘ঐতিহাসিক’ প্রতিরক্ষা চুক্তির পথে


ছবিঃ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো ১২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির অ্যাডমিরালটি হাউসে পৌঁছানোর পর সম্মান রক্ষী বাহিনী পরিদর্শনকালে স্যালুট জানাচ্ছেন। (সংগৃহীত । আল জাজিরা । রিক রাইক্ৰফট/পুল, রয়টার্সের মাধ্যমে)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | PNN

অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়া শিগগিরই একটি “ঐতিহাসিক” প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে, যা দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করবে। বুধবার (১২ নভেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো চুক্তিটির অনুমোদন দেন। তবে আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে আগামী জানুয়ারিতে।

চুক্তির আওতায় দুই দেশ নিয়মিতভাবে সরকারপ্রধান ও মন্ত্রিপর্যায়ে নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেবে। এছাড়া উভয় দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ ও যৌথ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, “এই চুক্তি শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় যৌথ পদক্ষেপের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেয়। আমরা বুঝি, একসঙ্গে কাজ করলেই টেকসই নিরাপত্তা সম্ভব।”

প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেন, “ভালো প্রতিবেশীরা বিপদের সময় একে অপরের পাশে থাকে। আমাদের সংস্কৃতিতে বলা হয়—বিপদের সময় সবচেয়ে আগে সাহায্য করে প্রতিবেশীই।”

যদিও এখনো চুক্তির পূর্ণাঙ্গ পাঠ প্রকাশ করা হয়নি, তবে অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম এবিসি নিউজ জানিয়েছে, এটি ১৯৯৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পল কিটিং ও প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর মধ্যে স্বাক্ষরিত নিরাপত্তা চুক্তির আদলে তৈরি।

পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণের পর সেই পুরোনো চুক্তিটি বাতিল করে ইন্দোনেশিয়া। তবে ২০০২ সালে পূর্ব তিমুর স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটে। পরবর্তী সময়ে তারা ২০০৬ সালের লমবক চুক্তি ও ২০২৪ সালের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে।

নতুন এই চুক্তি আগের দুই চুক্তির ধারাবাহিকতায় দুই দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনায় যুক্ত করবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি নিয়ে উভয় দেশই দীর্ঘদিন ধরে উদ্বিগ্ন। যদিও চীন দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার, তবে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে।

সাবেক অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী পল কিটিং এবিসিকে বলেন, “সুহার্তো ও আমি তিন দশক আগেই বুঝেছিলাম—ভৌগোলিক কারণে এক দেশের নিরাপত্তা হুমকি অপর দেশের ওপরও প্রভাব ফেলবে। তখনই আমরা পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ধারণা নিয়েছিলাম।”

অস্ট্রেলিয়া-ইন্দোনেশিয়ার এই আসন্ন চুক্তিকে দুই দেশের মধ্যে “প্রতিরক্ষা কূটনীতির নতুন অধ্যায়” হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন