- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির আরও শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ইস্তাম্বুল প্রসিকিউটর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মোট ৩৭ জন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
তুরস্ক অভিযোগ করেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, তা “পদ্ধতিগতভাবে পরিচালিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের” শামিল। প্রসিকিউটর অফিসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর গাজার আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের ওপর ইসরায়েলি হামলায় ৫০০ মানুষ নিহত হন। এছাড়া ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস করে এবং গাজাকে অবরুদ্ধ রেখে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেয়।
তুরস্ক আরও জানায়, গাজায় তুরস্কের অর্থায়নে নির্মিত “তুর্কি-ফিলিস্তিনি বন্ধুত্ব হাসপাতাল” গত মার্চে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অন্যদিকে ইসরায়েল এই পদক্ষেপকে “রাজনৈতিক প্রচারণা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডন সা’র এক্স (X)-এ পোস্টে লিখেছেন, “ইসরায়েল এই নাটকীয় প্রদর্শনকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা ও ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে। এটি একনায়ক এরদোয়ানের আরেকটি প্রচারণা মাত্র।”
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস তুরস্কের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “এটি তুর্কি জনগণ ও নেতৃত্বের ন্যায়বিচার, মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন।”
এর আগে ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। একই বছর তুরস্ক দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগ দিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা সমর্থন করে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় অন্তত ৬৮ হাজার ৮৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।