Wednesday, October 22, 2025

মাদাগাস্কারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর কর্নেল মাইকেল রান্ড্রিয়ানিরিনা এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহন


ছবিঃ কর্নেল মাইকেল রান্ড্রিয়ানিরিনা ১৭ অক্টোবর ২০২৫, মাদাগাস্কারের আন্তানানারিভোতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর উচ্চ সংবিধানিক আদালতে তার বক্তৃতা প্রদান করছেন (সংগৃহীত । ব্রায়ান ইনগাঙ্গা/AP)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN 

মাদাগাস্কার সম্প্রতি এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর কর্নেল মাইকেল রান্ড্রিয়ানিরিনা দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। শুক্রবার, দেশটির উচ্চ সংবিধানিক আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে তার মনোনয়ন ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপটি গাজা অঞ্চলের সাম্প্রতিক গণ আন্দোলনের পর এসেছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোএলিনা দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নেন।

রান্ড্রিয়ানিরিনা, যিনি গত সপ্তাহে রাজোএলিনাকে অপসারণের জন্য ব্যাপক বিক্ষোভের পর ক্ষমতা গ্রহণ করেন, শুক্রবার শপথ অনুষ্ঠানে বলেন, "আজ আমাদের দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। জনগণের প্রবল আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের দেশপ্রেমের শক্তিতে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা আমাদের জাতির জীবনে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি।"

এই অনুষ্ঠানে সামরিক কর্মকর্তারা, রাজনৈতিক নেতারা, "জেন জেড" নেতৃত্বাধীন যুব আন্দোলন এবং বিভিন্ন বিদেশি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট রান্ড্রিয়ানিরিনা তার বক্তৃতায় বলেন, "আমরা জাতির সমস্ত শক্তির সাথে হাতে হাতে কাজ করব একটি সুন্দর সংবিধান খসড়া তৈরির জন্য এবং নির্বাচনের জন্য নতুন আইন তৈরির জন্য।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য হল অতীতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং দেশের প্রশাসনিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোতে পূর্ণ সংস্কার সাধন করা।"

তিনি আরও জানান, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, বা ন্যাশনাল অ্যাসেমবলি ছাড়া অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠান বাতিল করেছে।

রান্ড্রিয়ানিরিনা, যিনি ৫১ বছর বয়সী ক্যাপসেট ইউনিটের কমান্ডার, স্থানীয় মিডিয়াকে জানিয়েছেন যে, আগামী ১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে এবং প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য আলোচনা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংবাদদাতারা জানিয়েছেন যে, তিনি তার পোশাকটি সাবধানতার সাথে নির্বাচন করেছিলেন: মিলিটারি ইউনিফর্মের বদলে একটি সিভিলিয়ান স্যুট পরেছিলেন, যা তিনি শপথ অনুষ্ঠান এবং নতুন সরকারের গঠন সম্পর্কে সাংবিধানিক গাইডলাইনগুলি অনুসরণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

সামরিক অভ্যুত্থান ও রান্ড্রিয়ানিরিনা সরকারের এই পরিবর্তন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিবর্তনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে, মাদাগাস্কারের জনগণ এবং তরুণদের মধ্যে রাজনীতিতে পরিবর্তন আনার জন্য শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে।

এই সামরিক অভ্যুত্থান মাদাগাস্কারের জন্য তৃতীয় সামরিক শাসন, যা ১৯৭২ এবং ২০০৯ সালে ঘটেছিল, যখন দেশটি ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সামরিক সরকারে চলে গিয়েছিল।

এই পরিস্থিতি নিয়ে আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা উন্নয়ন সম্প্রদায় (SADC) মাদাগাস্কারে তথ্য-সংগ্রহ মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সংবিধানিক গণতন্ত্রের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

মাদাগাস্কার, যার ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে একটি, যা এই ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন