Friday, December 5, 2025

জর্জিয়ার কংগ্রেসওমেন মার্জোরি গ্রিনের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার ট্রাম্পের


ছবিঃ ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএস প্রতিনিধি মার্জোরি টেলর গ্রিন ‘এপস্টিন ফাইলস ট্রান্সপারেন্সি বিল’ বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন (সংগৃহীত । আল জাজিরা । জোনাথন আর্নস্ট/রয়টার্স)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। PNN 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দীর্ঘদিনের মিত্র রিপাবলিকান কংগ্রেসওমেন মার্জোরি টেইলর গ্রিন–এর প্রতি সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল–এ এক পোস্টে তিনি গ্রিনকে আখ্যায়িত করেন “উন্মাদ” এবং অভিযোগ করেন যে গ্রিন “অতি বামপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন”।

ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, “আমি জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ‘কংগ্রেসওমেন’ মার্জোরি টেইলর গ্রিনের প্রতি দেওয়া সমর্থন ও অনুমোদন প্রত্যাহার করছি।”
তিনি আরও দাবি করেন, গ্রিন শুধু “অভিযোগ আর অভিযোগ করেই সময় কাটান”, অথচ তাঁর প্রশাসন “ঐতিহাসিক সাফল্য” অর্জন করেছে।

গ্রিন ট্রাম্পের সবচেয়ে জোরালো সমর্থকদের একজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এমনকি তিনি ২০২৪ সালের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে অংশ নেন মাথায় “মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন” টুপি পরে।

কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গ্রিন ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন অবস্থানের বিরোধিতা শুরু করেন, বিশেষ করে। ফেডারেল সরকার বন্ধের সময় প্রশাসনের ভূমিকা, স্বাস্থ্যবীমা ভর্তুকি কাটছাঁটে প্রভাবিত জনগণের জন্য পরিকল্পনার অভাব—এসব নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন।

সবচেয়ে বড় বিরোধ দেখা দেয় জেফ্রি এপস্টিন–এর ফাইল প্রকাশের দাবিতে। গ্রিন এ ইস্যুতে পুরোপুরি স্বচ্ছতার দাবি জানিয়ে আসছেন, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অস্বস্তিতে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর গ্রিন সামাজিক মাধ্যমে জানান, এপস্টিন–সংশ্লিষ্ট একটি বার্তা তিনি ট্রাম্পকে পাঠিয়েছিলেন—আর সেটিই নাকি তাঁকে ক্ষুব্ধ করেছে।  গ্রিনের দাবি, “ট্রাম্প এপস্টিন–ফাইল প্রকাশ ঠেকাতে এতটাই মরিয়া যে আমাকে উদাহরণ হিসেবে শাস্তি দিতে চাইছেন, যেন অন্য রিপাবলিকানরা ভয় পায়।”

তিনি আরও লেখেন, “যদি তিনি এত শক্তি আমেরিকার সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে ব্যয় করতেন, তাহলে দেশ অনেক ভালো থাকত।”

বুধবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন ঘোষণা করেন, আগামী সপ্তাহে এপস্টিন–সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই ভোট চাপিয়ে আনতে যে ডিসচার্জ পিটিশন আনা হয়েছে, তাতে গ্রিনসহ চারজন রিপাবলিকান স্বাক্ষর করেছেন।

যদি বিলটি পাস হয়, তবে প্রকাশ করতে হবে: এপস্টিনের ফ্লাইট লগ ও ভ্রমণ রেকর্ড, তদন্তে সংশ্লিষ্ট বা উল্লেখিত ব্যক্তিদের তালিকা, এপস্টিন ও গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল–সংশ্লিষ্ট তদন্তের নথি।

এই প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি ডেমোক্র্যাটদের প্রকাশ করা কিছু ইমেইলে দাবি করা হয়—ট্রাম্প নাকি এপস্টিনের বাড়িতে “ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছেন” এক নির্যাতিত ভুক্তভোগীর সঙ্গে। হোয়াইট হাউস অবশ্য এই অভিযোগকে “ভিত্তিহীন” বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

ট্রাম্প নিজেও দাবি করেন, “এপস্টিন লিস্ট”–এ তাঁর নাম থাকার কথা বলা হচ্ছে—এটি “ডেমোক্র্যাটদের বানানো ষড়যন্ত্র”।

গ্রিনকে সমর্থন প্রত্যাহারের পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “সে নাকি কাঁদছে যে আমি ফোন ধরি না। দিনে ২০০ দেশের নেতা, ৫৩ সিনেটর, শতাধিক কংগ্রেস সদস্য আর পুরো প্রশাসন নিয়ে আমি ব্যস্ত—একজন ‘উন্মাদ’–এর প্রতিদিনের ফোন ধরা সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, জর্জিয়ার রিপাবলিকান নেতারাও গ্রিনের আচরণে “বিরক্ত” এবং আগামী মধ্যবর্তী নির্বাচনে কেউ শক্তিশালী প্রার্থী হলে তাকে পূর্ণ সমর্থন দেবেন।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন