- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক নিন্দা উপেক্ষা করে গাজা সিটিতে মঙ্গলবার থেকে বিস্তৃত স্থল আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। আক্রমণের সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে বিমান হামলা ও টানা বোমাবর্ষণ, যার ফলে হাজারো মানুষ নগরী ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এটিকে যুদ্ধের “গুরুত্বপূর্ণ ধাপ” বলে উল্লেখ করেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, সেনারা “সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস” এবং “জিম্মিদের মুক্তি ও হামাসকে পরাজিত করা”র লক্ষ্যে অভিযান চালাচ্ছে।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ অভিযানের ফলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেছে। ইতিমধ্যেই গাজার উত্তরাংশে ৯০ জনেরও বেশি নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বোমাবর্ষণে ঘরবাড়ি ধসে পড়ায় বহু পরিবার আবারও বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। অনেকেই কেবল কিছু কাপড়চোপড় ও বিছানাপত্র নিয়ে দক্ষিণে পালিয়ে যাচ্ছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “আমরা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পালাচ্ছি, কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর দিকেই যাচ্ছি।”
জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক আক্রমণকে “অসহনীয় নৃশংসতা” আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে ইউনিসেফ সতর্ক করেছে যে, অভিযানের আরও তীব্রতা শিশুদের জন্য “অচিন্তনীয় দুর্ভোগ” বয়ে আনবে। বর্তমানে শুধু গাজা সিটিতেই প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার শিশু দুর্ভিক্ষ ও চিকিৎসাহীনতার মুখে রয়েছে।
প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, এই আক্রমণকে “মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ” হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েল সফরে এসে হামাসকে জিম্মি মুক্তি ও ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানালেও সামরিক অভিযানকে ন্যায্য বলেছেন।
হামাস এ হামলাকে “অভূতপূর্ব বর্বরতা” বলে নিন্দা জানিয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক ধারণা অনুযায়ী, গাজা সিটিতে প্রায় ৩ হাজারের মতো যোদ্ধা অবস্থান করছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি হামাসের শেষ ঘাঁটি নয়, বরং আসন্ন দিনগুলোতে আরও রক্তক্ষয়ী অভিযান চলতে পারে।