Tuesday, October 14, 2025

ইউক্রেনে রাশিয়ার গ্রীষ্মকালীন আক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, পোক্রোভস্ক ঘিরে নতুন সংকট


ছবি: ইউক্রেনের পোকরভস্ক শহর থেকে পুলিশ যখন বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে, তখন রাস্তায় পুড়ে যাওয়া গাড়িগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়। (সংগৃহীতঃ কস্তিয়ান্তিন লিবারভ / লিবকস / গেটি ইমেজেস)

রাশিয়ার গ্রীষ্মকালীন সামরিক অভিযান এখন ইউক্রেনের জন্য এক ভয়াবহ সংকটে পরিণত হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেনজুড়ে রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে, ছোট ছোট অঞ্চল দখল করে জোটবদ্ধভাবে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। ডনেস্ক অঞ্চলের পোক্রোভস্ক শহর এখন ঘিরে ফেলার ঝুঁকিতে পড়েছে।

রাশিয়ার ড্রোন আক্রমণ ও দখলদারি কৌশল ইউক্রেনীয় বাহিনীর আস্থা ও প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। পোক্রোভস্ক শহরের কাছে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক দমিত্রো বলেন, আহতদের জন্য অপেক্ষা করেও কেউ পৌঁছায়নি। কারণ, রাশিয়ার ড্রোন আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এবং এমনকি সাঁজোয়া যান দিয়েও আহতদের সরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

ডনেস্ক অঞ্চলের দুই গুরুত্বপূর্ণ শহর—কস্তিয়ান্তিনিভকা ও পোক্রোভস্ক—ঘিরে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে দ্রুত জমি হারাতে দেখা গেছে। রাশিয়ার ড্রোন ও পদাতিক বাহিনী গভীরভাবে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ঢুকে পড়েছে।

ইউক্রেনের এক সেনা কমান্ডার জানান, পোক্রোভস্কের পাশের শহর মিরনোহ্রাদ ঘিরে ফেলার শঙ্কা রয়েছে। রুশ বাহিনী ইতিমধ্যেই রোদিনস্কে গ্রামে প্রবেশ করেছে এবং বিলেতস্কের প্রান্তে পৌঁছে গেছে, যা ইউক্রেনীয় সেনাদের রসদ সরবরাহের পথ বিপন্ন করছে।

৯৩তম মেকানাইজড ব্রিগেডের কমান্ডার ভাসিল বলেন, “আমরা আট মাস ধরে নতুন কোনো সেনা পাইনি। পুরাতন সৈন্যরা ক্লান্ত, পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছে, কিন্তু কেউ আসছে না।” তিনি অভিযোগ করেন, সামনে যা ঘটছে তার অনেক কিছুই সঠিকভাবে উচ্চপর্যায়ে জানানো হচ্ছে না।

চাসিভ ইয়ার শহর দখলের দাবি রাশিয়া করলে তা আরও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। এই শহরটি দখল মানে রুশ বাহিনীকে উচ্চভূমি থেকে অন্যান্য এলাকায় আক্রমণ চালানোর সুবিধা দেওয়া। কস্তিয়ান্তিনিভকা, পোক্রোভস্ক এবং কুপিয়ানস্ক শহরগুলো হারালে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুরুতর হুমকির মুখে পড়বে।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শান্তিচুক্তি করতে ৫০ দিনের বদলে মাত্র ১২ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি “ভীষণভাবে হতাশ” পুতিনের ওপর এবং সন্দেহ প্রকাশ করেন যে রাশিয়া শান্তির কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।

পশ্চিমা অস্ত্র সহায়তার অনিশ্চয়তা, মানবসম্পদের ঘাটতি, এবং মেরামতের অক্ষমতা—সব মিলিয়ে ইউক্রেন একটি ভয়াবহ ঘূর্ণিপাকে পড়েছে। পরিস্থিতি যদি দ্রুত পরিবর্তিত না হয়, তবে রাশিয়ার এই গ্রীষ্মকালীন অভিযান যুদ্ধের গতিপথ আমূল পাল্টে দিতে পারে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন