- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক। PNN
ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্যাতন, উপেক্ষা এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন শুধুমাত্র ঘটনা নয়, এটি একটি সংগঠিত নীতি—এমনটাই প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা “ইসরায়েলের মানবাধিকারের জন্য চিকিৎসকগণ (PHRI)”সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন অনুসারে, কমপক্ষে ৯৪ জন ফিলিস্তিনি বন্দি কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে প্রতিবেদকরা মনে করছেন। নিহতদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে নির্যাতন, আক্রমণ, চিকিৎসা অবহেলা এবং অপর্যাপ্ত পুষ্টি উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার বর্ণনাও আছে। এর মধ্যে ৩৩ বছর বয়সী আব্দুল-রহমান মারিকে উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি মেগিডো কারাগারে মৃত্যুর আগে দেহে ব্যাপক আঘাত ও চিহ্ন নিয়ে পরিবারের কাছে ফিরেছিলেন। এছাড়া ১৭ বছর বয়সী ওয়ালিদ খালেদ আবদুল্লাহ আহমাদ, যিনি পূর্বে একজন ক্রীড়াবিদ ছিলেন, তার দেহে প্রায় কোনো পেশী বা চর্বি অবশিষ্ট ছিল না এবং মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দীর্ঘমেয়াদী অপুষ্টি চিহ্নিত হয়েছে।
আরেকটি চরম ঘটনা হলো ২৫ বছর বয়সী আরাফাত হামদান, যিনি কেবল দুই দিন কারাগারে ছিলেন এবং টাইপ ১ ডায়াবেটিসের কারণে নিয়মিত ইনসুলিন প্রয়োজন হলেও তাকে তিক্তভাবে নির্যাতন করা হয় এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয়নি।
PHRI-এর প্রতিবেদক ওনেগ বেন দ্রর জানান, “এটি শুধু কোনো ব্যক্তি বা দলের নীতি নয়। এটি ইসরায়েলের একটি ব্যাপক নীতি, যা সামরিক ও নাগরিক কারাগারসহ সব ধরনের আটক কেন্দ্রের ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে প্রয়োগ করা হচ্ছে।”
ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠন আদামীর এর রিপোর্টে দেখা গেছে, কারাগারে বন্দিদের খাবারের পরিমাণ ‘ন্যূনতমের ন্যূনতম’ পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা যেমন আইসিআরসি কে কারাগারে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন, "প্রকাশিত সব প্রমাণ সত্ত্বেও ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রবেশ সীমাবদ্ধ রাখছে। যেকোনো দায়মুক্তি ছাড়া এই নির্যাতন আরও গভীর হবে এবং আরও মৃত্যু ঘটতে থাকবে।"
এদিকে, ইসরায়েল সরকার এবং প্রায়শই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করছে এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কারাগারের পরিস্থিতি যথাযথ বলে দাবি করছে।