- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | PNN
গাজা উপত্যকার উত্তরে মানবিক সহায়তাকারীদের সতর্ক করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। তাদের বার্তায় জানানো হয়েছে, কেবলমাত্র হাসপাতালগুলোকে “সুরক্ষিত স্থান” হিসেবে গণ্য করা হবে, অন্য কোনো মানবিক অবকাঠামো নিরাপদ নয় এবং হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
শুক্রবার আইডিএফ জানায়, তারা গাজা সিটিতে অভিযান আরও বিস্তৃত করেছে এবং “হামাস অবকাঠামো” লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। ইতোমধ্যেই এক থেকে পাঁচ লাখ মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়েছে, তবে অনেকে রয়ে গেছেন সীমিত আর্থিক সামর্থ্য কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে। গাড়িতে করে দক্ষিণে যাওয়া এখন এক যাত্রায় খরচ পড়ছে প্রায় দুই হাজার ডলার পর্যন্ত।
বাসিন্দা তৌফিক আবু মাওয়াদ বলেন, “সারা রাত ট্যাংক থেকে শেল ছোড়া হচ্ছিল। আমি সন্তানদের নিয়ে পালাতে চাই, কিন্তু কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। আমাদের অবস্থা খুবই করুণ।”
ইসরায়েল জানিয়েছে, দক্ষিণের আল-মাওয়াসি উপকূলীয় এলাকায় নতুন করে “মানবিক অঞ্চল” তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও পানির জন্য ডেস্যালিনেশন প্লান্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, এ অঞ্চল ইতোমধ্যেই জনাকীর্ণ এবং অপর্যাপ্ত সুবিধার কারণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত গাজায় কোনো সহায়তা ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২৫০টি ট্রাক প্রবেশ করছে, তবে এ পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। অনেক ট্রাক বাণিজ্যিক পণ্য বহন করছে, যেগুলো পুষ্টিহীন ও দামি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নতুন অভিযান কেবল সামরিক নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও বহন করছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার অভ্যন্তরীণ চাপে রয়েছে, এবং যুদ্ধ চলমান রাখার মাধ্যমে আগাম নির্বাচন এড়াতে চাইছে। ডানপন্থী সহযোগীরা উত্তর গাজাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অযোগ্য করে তোলার পক্ষে চাপ দিচ্ছে।
ইসরায়েলি মন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এক ধাপ এগিয়ে গাজাকে “রিয়েল এস্টেটের সুবর্ণ সুযোগ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একইসঙ্গে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংস্থা কোগাত ফিলিস্তিনিদের বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।