- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভে নেমেছে দলটি। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের লক্ষ্য শুধু ইমরান খান নয়, কারাবন্দি দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিও এতে শামিল রয়েছে।
দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ইমরান খানের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিটিআই। দলের শীর্ষ নেতা ও সাবেক স্পিকার আসাদ কায়সার এ আন্দোলনকে এক দিনের কর্মসূচি নয়, বরং সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
আসাদ কায়সার বলেন, “এই আন্দোলন হচ্ছে একটি শুরু, চূড়ান্ত পর্ব নয়। আমাদের লক্ষ্য, জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব ফিরিয়ে আনা।”
দলীয় সূত্র জানায়, পিটিআই-এর প্রাদেশিক শাখাগুলোকে সমাবেশ, মিছিল, গণসচেতনতা তৈরির কর্মসূচি ও অন্যান্য প্রতিবাদী কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিক্ষোভ দমনে সরকার ইতোমধ্যেই কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ পিটিআই-এর।
দলের দাবি, পাঞ্জাব ও কাশ্মীর অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। অনেক জায়গায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। পিটিআই পাঞ্জাব মিডিয়া সেলের প্রধান শায়ান বশির এবং সিনেটর আলী জাফর এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অন্তত ২০০টির বেশি অভিযান চালানো হয়েছে এবং অনেক কর্মীকে হলফনামা জমা দেওয়ার শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
সিনেটর আলী জাফর বলেন, “ইমরান খান আইনের শাসন এবং দেশের স্বার্থে ১০ বছর জেল খাটতেও প্রস্তুত আছেন। তবে কোনো ভুয়া মামলা বা দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া তাঁকে নতজানু করতে পারবে না।”
পিটিআই বারবার দাবি করে আসছে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিরোধীদের দমন করতেই এগুলোকে হাতিয়ার বানিয়েছে বর্তমান সরকার।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিটি প্রান্তে সংগঠিতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে, যাতে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে ‘ভুয়া সরকার’-কে হটিয়ে ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করা যায়।
এই আন্দোলনের গতি ও পরিণতি নির্ভর করছে পিটিআই-এর সাংগঠনিক শক্তি, জনসম্পৃক্ততা এবং সরকারের প্রতিক্রিয়ার ওপর। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—ইমরান খানকে ঘিরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও বড় ধরনের আলোড়ন শুরু হয়েছে।