- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
হাইতি মানুষের এক বিশাল অংশ কঠিন ক্ষুধার মুখোমুখি হচ্ছে, দেশটিতে বন্দুকধারী গ্যাংয়ের দখল ও নাজুক অর্থনীতির অবনতি ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (IPC) শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রায় ১১ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে ৫.৭ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে।
প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মানুষ বর্তমানে জরুরি খাদ্য সংকটে আছেন, যেখানে মারাত্মক পুষ্টিহীনতা ও খাদ্য ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে ৩.৮ মিলিয়ন মানুষ সংকটময় খাদ্য নিরাপত্তার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ সালের মধ্য নাগাদ প্রায় ছয় মিলিয়ন মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হতে পারেন, যখন হাইতি কৃষি ঋতুতে প্রবেশ করবে।
সরকার শীঘ্রই একটি খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অফিস গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে, যাতে ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বিতভাবে পরিচালনা করা যায়। তবে দেশটির অবস্থা অত্যন্ত জটিল, কারণ রাজধানী পোর্ট-অউ-প্রিন্সের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকায় এখন গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তারা সম্প্রতি কৃষি অঞ্চলেও সম্প্রসারণ করেছে।
অর্থনৈতিক বিপর্যয় পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে। হাইতি ছয় বছর ধরে মন্দার মধ্যে আছে, আর গত জুলাইয়ে খাদ্যের দাম আগের বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুদের উপর এই সংকটের প্রভাব মারাত্মক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ৬৮০,০০০ শিশু সহিংসতার কারণে স্থানচ্যুত হয়েছে এবং হাজারো স্কুল বন্ধ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জাতিসংঘে নতুন ৫,৫৫০ সদস্যের গ্যাং দমন বাহিনী অনুমোদন করেছে, তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, সমস্যার মূল সমাধান না হলে সাময়িক উন্নতি তুচ্ছ এবং দুর্বল থাকবে।
বন্দুকধারী গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও কৃষিক্ষেত্রে বাধার কারণে হাইতির মানবিক সংকট ক্রমেই গভীর হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সহায়তা ও কার্যকর নীতির অবিলম্বিত প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করছে।
তথ্যসূত্রঃ আল জাজিরা