Friday, December 5, 2025

গিনি -বিসাউয়ে সামরিক বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি, প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী নেতা আটক


ছবিঃ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডেনিস এন’কানহা, গিনি-বিসাউ প্রেসিডেন্সির সামরিক দপ্তরের প্রধান, ২৬ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে সরকার দখলের ঘোষণা দিচ্ছেন। (সংগৃহীত । আল জাজিরা । প্যাট্রিক মেইনহার্ডট/এএফপি)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। PNN 

গিনি-বিসাউয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা চরমে উঠতেই দেশটির একদল সামরিক কর্মকর্তা ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদেরকে “শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার উচ্চ সামরিক কমান্ড” হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে জানায়, নির্বাচন প্রক্রিয়া “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত” স্থগিত করা হলো।

সামরিক বাহিনীর ঘোষণার পরই সব স্থল, আকাশ ও সমুদ্র সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং রাতের বেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

বুধবার সকালে রাজধানী বিসাউয়ের নির্বাচনী কমিশন কার্যালয়, প্রেসিডেন্ট ভবন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আশপাশে টানা গুলির শব্দ শোনা যায়। এর কিছুক্ষণ পরই সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা আসে।

দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো ফরাসি গণমাধ্যমকে জানান, “আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আমি এখনো সেনাবাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান করছি।”

প্রতিবেশী সেনেগাল থেকে আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, এমবালোকে আটক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধান বিরোধী দল পিএআইজিসির নেতা ডমিঙ্গোস সিমোয়েস পেরেইরাকেও গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়।

সামরিক অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা কর্মকর্তা ডেনিস এন’কানহা প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা প্রধান ছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, “যিনি প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করার কথা, তাকেই বন্দি করেছেন।”

রবিবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এমবালো ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফের্নান্দো দিয়াস উভয়েই ফল ঘোষণার আগেই নিজেদের বিজয়ী দাবি করেন। কোনো পক্ষই তাদের দাবির সপক্ষে যথেষ্ট তথ্য উপস্থাপন করতে পারেনি।

সামাজিক সংগঠন ও পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কারণ বেশ কিছু দলকে ভোটে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।

১৯৭৪ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে দেশটিতে একাধিক অভ্যুত্থান ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনের পরও চার মাস ধরে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল।

এই প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহের নির্বাচনে আবারও অচলাবস্থার শঙ্কা দেখা দিলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে বলে মনে করা হচ্ছে।

পশ্চিম আফ্রিকান আঞ্চলিক জোট ইকোওয়াস ও আফ্রিকান ইউনিয়ন সামরিক হস্তক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, “দুই প্রার্থীই জনগণের রায় মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর এমন ঘোষণা হতাশাজনক।”

পর্যবেক্ষক দলগুলো যার মধ্যে ছিলেন মোজাম্বিকের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিলিপে নুসি ও নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন সমর্থকদের শান্ত থাকতে এবং সামরিক বাহিনীকে আটককৃত নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংযম ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।

পর্তুগাল সরকারও জানিয়েছে, “গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।”

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন