Tuesday, October 14, 2025

গাজায় সামরিক অভিযান বিস্তারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ


ছবিঃ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে (সংগৃহীত । বি বি সি)

ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে সরকারের গাজায় সামরিক অভিযান বিস্তারের পরিকল্পনার প্রতিবাদে। শনিবার (৯ আগস্ট) তেল আবিব, জেরুজালেমসহ একাধিক স্থানে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বন্দিদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন।

এর আগে শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা যুদ্ধ শেষ করার জন্য পাঁচটি নীতি অনুমোদন করে, যার মধ্যে গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজা সিটি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, এ ধরনের পদক্ষেপ গাজায় আটক বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে। তেল আবিবে আয়োজিত এক সমাবেশে বন্দিদের পরিবার দাবি জানায়—যুদ্ধ বিস্তার না করে বন্দিদের মুক্তির জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে।

জেরুজালেমে এক বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক প্রাক্তন সেনা সদস্য বলেন, তিনি যুদ্ধের শুরুতে সেনাবাহিনীতে ছিলেন, তবে এখন আর অংশ নিতে রাজি নন। তার ভাষ্য, "আমরা ৩৫০ জনের বেশি সৈন্য এই রাজনৈতিক যুদ্ধে সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি, যা বন্দিদের ঝুঁকিতে ফেলছে এবং গাজার সাধারণ মানুষকে অনাহারে ঠেলে দিচ্ছে।"

শনিবার রাতে তেল আবিবে প্রধান সড়ক আয়ালন হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা, এ সময় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে এবং সড়কে আগুন লাগানোর সরঞ্জাম জব্দ করেছে।

ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামিরও গাজার পূর্ণ দখলের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এটি "একটি ফাঁদে পা দেওয়ার শামিল" এবং জীবিত বন্দিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

জনমত জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ ইসরায়েলি জনগণ হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির পক্ষে। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, গাজা মুক্ত করার মাধ্যমেই বন্দিদের নিরাপদে ফেরানো সম্ভব হবে।

জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও জার্মানির মতো দেশগুলো ইসরায়েলের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে। জার্মানি সামরিক রপ্তানি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ রবিবার বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক করবে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ৫৯ জন নিহত ও ৩৬৩ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫ জন খাদ্য সহায়তা সংগ্রহের সময় প্রাণ হারান। এছাড়া অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৭-এ, যাদের মধ্যে ১০০ জন শিশু।

ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় অনাহারের জন্য হামাস দায়ী। তবে জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন