Tuesday, October 14, 2025

গাজায় খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত ৫৬ জন, মানবিক কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলার অভিযোগ


গাজা উপত্যকায় সোমবার ভোর থেকে অন্তত ৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৮ জনই খাবারের জন্য সহায়তা কেন্দ্রে অপেক্ষারত ছিলেন। নিহতদের বেশিরভাগই রাফাহ অঞ্চলে মানবিক ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র।এই প্রাণঘাতী হামলাগুলো ঘটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (GHF) পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রে।

এই কেন্দ্রগুলোকে অনেকেই “মানব হত্যাকেন্দ্র” বলে অভিহিত করছেন, কারণ সেগুলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় অবস্থিত।জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, "গাজার জনগণের ওপর ইসরায়েলের যুদ্ধ কৌশল অমানবিক ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।" তিনি জানান, গত ২০ মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৫,৩৬২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশু রয়েছে।GHF চালু হওয়ার পর থেকে বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত ও ২,০০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

রাফাহ শহরের ‘ফ্ল্যাগ রাউন্ডআবাউট’-এ খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে বেঁচে ফেরা হেবা জৌদা ও মোহাম্মদ আবেদ জানান, ভোর ৪টার দিকে তারা গুলিবর্ষণের মুখে পড়েন। “চারপাশ থেকে গুলি আসছিল,” বলেন হেবা, “দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।উত্তর গাজায় আরও তিনজন এবং গাজা শহরে হামলায় দুইজন নিহত হন।ভলকার টার্ক বলেন, “ইসরায়েল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং জরুরি সহায়তা বাধাগ্রস্ত করছে।” তিনি নিহতদের বিষয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান এবং ইসরায়েলি নেতাদের পক্ষ থেকে আসা "অমানবিক ভাষ্যকে" গুরুতর অপরাধের সঙ্গে তুলনা করেন।GHF এর কার্যক্রম শুরু হয় মে মাসের শেষে, যখন ইসরায়েল তিন মাসের অবরোধ কিছুটা শিথিল করে।

তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা GHF-এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের অভিযোগ, এই সংস্থাটি মানবিক প্রয়োজনের চেয়ে ইসরায়েলি সামরিক কৌশলকে বেশি গুরুত্ব দেয়।রাফাহ ও নেটসারিম করিডোরে সহায়তা নিতে আসা মানুষের ওপর গুলির ঘটনায় সম্প্রতি GHF-এর কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ়জুম দেইর আল-বালাহ থেকে জানান, “বর্তমান খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা গাজাবাসীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও হতাশা সৃষ্টি করছে। অনেক ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি বাধ্য হচ্ছেন—বাসায় থেকে না খেয়ে মরবেন, নাকি জীবন ঝুঁকিতে ফেলে এক ব্যাগ ময়দা সংগ্রহ করবেন, এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে।


ছবিঃইন্টারনেট হতে  সংগৃহীত(17/06/2025)

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন