- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
ইসরায়েলের টানা হামলার পর অবশেষে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির খবর পেয়ে গাজাজুড়ে স্বস্তি ও উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। দুই বছরব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষে বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনিরা এই যুদ্ধবিরতিকে ‘আশার প্রথম আলো’ হিসেবে দেখছেন।
বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় যুদ্ধবিরতির খবর নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুসের রাস্তায় হাজারো মানুষ নেমে আসে। তারা পতাকা হাতে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং একে অপরকে আলিঙ্গন করে অভিনন্দন জানান।
গাজার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ আব্দ রব্বো বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, রক্তপাত ও হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটছে। পুরো গাজা আজ খুশিতে ভাসছে।”
আরেক বাসিন্দা খালেদ শাআত বলেন, “এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। রাস্তায় মানুষের চোখে যে আনন্দ দেখেছি, তা গণহত্যা থেকে মুক্তির প্রথম নিঃশ্বাস।”
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানান, “এটি গাজার মানুষের জন্য বহু প্রতীক্ষিত শান্তির সময়। দীর্ঘ অবরোধ, দুর্ভিক্ষ ও হামলার পর এমন স্বস্তি অনুভব করাটা এক ঐতিহাসিক ঘটনা।”
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে ইসরায়েলি সেনারা নির্দিষ্ট সীমারেখা পর্যন্ত পিছু হটবে। দ্বিতীয় ধাপে সম্পূর্ণ ইসরায়েলি প্রত্যাহার ও গাজার নতুন প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে।
তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও বুধবার রাত পর্যন্ত গাজা শহরে কয়েকটি বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স বিভাগ।
অন্যদিকে, ইসরায়েলেও যুদ্ধবিরতির খবরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা তেল আবিবের ‘হোস্টেজ স্কোয়ার’-এ জড়ো হয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। মাতান জানজাউকারের মা আইনাভ জানজাউকার বলেন, “অবশেষে আশা ফিরে পেয়েছি। আমরা শুধু চাই, সবাই নিরাপদে ঘরে ফিরুক।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা বৈঠক ডেকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ অনুমোদনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “এটি ইসরায়েলের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।”
গাজার জনগণের জন্য এই যুদ্ধবিরতি শুধু রাজনৈতিক চুক্তি নয়—এটি বেঁচে থাকার নতুন সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে।