Friday, December 5, 2025

গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা স্থবির, ট্রাম্পের ঘোষিত আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠিত হয়নি এখনও


ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২৯ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসের স্টেট ডাইনিং রুমে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করছেন। (সংগৃহীত । সিএনএন । জোনাথান আর্নস্ট/রয়টার্স)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:PNN 

প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় পার হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। পরিকল্পনার ২০টি ধাপের মধ্যে অন্যতম হলো আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (ISF) গঠন, যা গাজাকে স্থিতিশীল করতে পাঠানো হবে। তবে সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এখনও বাহিনীর দায়িত্ব, মিশনের পরিধি ও অন্যান্য নীতিগত বিষয় নিশ্চিত করতে পারিনি।

সেপ্টেম্বর ২৯ তারিখে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ISF “তৎক্ষণাত” গাজায় মোতায়েন হবে। বাহিনী প্যালেস্টাইন পুলিশকে প্রশিক্ষণ, ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষা, অস্ত্র প্রবাহ রোধ এবং ইসরায়েলি বাহিনীর আরো প্রত্যাহারের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গাজা থেকে বন্দি মুক্তি এবং প্যালেস্টাইন প্রিজনারদের মুক্তি কার্যকর হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপ হলো ISF গঠন। কিছু দেশ আগ্রহ প্রকাশ করলেও, কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয়নি।

সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলো স্পষ্টতা ও নিশ্চয়তা চাচ্ছে, কারণ গাজা এখন সশস্ত্র মিলিশিয়া, অপরাধী গোষ্ঠী এবং সম্ভাব্য ইসরায়েলি আক্রমণের হুমকির মধ্যে রয়েছে, যেখানে হামাস এখনও অস্ত্র ত্যাগ করেনি। এই বাহিনী গঠন হবে ২০০৭ সাল থেকে হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন এই অঞ্চলে অপ্রচলিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক এক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এখনও বাহিনীর আকার, প্রত্যেক দেশের অবদান, কমান্ড কাঠামো, নেতৃত্ব এবং বাহিনীর মোতায়েনকাল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছে।

ইসরায়েলও বাহিনীতে অংশগ্রহণকারী দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা বলেছে, তুরস্কের মতো দেশ অংশগ্রহণ করলে তা মেনে নেবে না, যদিও তুরস্ক যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।

মধ্যপ্রাচ্য ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো লুসি কুরটজার-এলেনবোগেন বলেন, “মিশনের গঠন, অস্ত্রসম্বলিত বাহিনীর সীমা এবং ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গে সমন্বয়ের অনিশ্চয়তা বাহিনী প্রবর্তনের পথে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।”

একটি স্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিছু দেশ চাচ্ছে বাহিনী হবে অস্থায়ী ও সীমিত সময়ের জন্য, যতক্ষণ না প্যালেস্টাইন অথরিটি পুরোপুরি গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও বলেন, “আমরা এমন কোনো আন্তর্জাতিক ম্যান্ডেটের কথা ভাবছি যা বাহিনীকে বৈধতা দেবে। কিছু দেশ তাদের আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অনুমোদন ছাড়া অংশগ্রহণ করতে পারবে না।”

জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ দ্বিতীয় এ বিষয়ে বিবিসিকে বলেছেন, বাহিনীর দায়িত্ব শান্তি রক্ষা না শান্তি প্রয়োগকারী হবে তা নির্ধারণ করা জরুরি। তিনি বলেন, “দেশগুলো চায় না গাজায় অস্ত্র হাতে ঘুরতে এবং যুদ্ধ পরিচালনা করতে।”

অন্য সমস্যা হলো বাহিনীর সশস্ত্র হওয়ার মাত্রা, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় এবং অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে তাদের ভূমিকা। এই বিষয়গুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি, যার কারণে মিশন শুরু করা এখনো সম্ভব হয়নি।

গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে, এবং আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়া আশার চেয়ে ধীরগতি নিয়েছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন