Tuesday, October 14, 2025

গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার মধ্যে অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৬৬ শিশু


ছবিঃ ইসরায়েলের কড়া অবরোধের ফলে গাজায় অপুষ্টিতে অন্তত ৬৬ ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে ( সংগৃহীত: গেটি)

গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার কর্তৃপক্ষ। তারা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েলের আরোপিত কঠোর অবরোধের ফলে দুধ, পুষ্টিকর খাবার ও ত্রাণ প্রবেশ করতে না পারায় এই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় শনিবার অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল যে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে তা একটি যুদ্ধাপরাধ এবং এটি ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে ক্ষুধার মাধ্যমে নির্মূল করার একটি কৌশল।

গাজার শিশুদের উপর এই বর্বরতা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে মিডিয়া অফিস। তারা বলেছে, শিশুদের অনাহার ও রোগে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং বিশ্ব নেতারা নীরব দর্শক হয়ে আছেন।

এছাড়াও তারা ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো এর মিত্রদের এই সংকটের জন্য দায়ী করেছে এবং জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন অবিলম্বে সীমান্ত খুলে দিয়ে ত্রাণ প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়।

এর আগে, জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, গাজায় শিশুদের অপুষ্টি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে এবং শুধু মে মাসেই ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ৫ হাজারের বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টির চিকিৎসা নিয়েছে।

ইউনিসেফের তথ্যমতে, মে মাসে গাজায় অপুষ্টির কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যা এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি, যেখানে এপ্রিল মাসে ৩,৪৪৪ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছিল। আর যুদ্ধবিরতির সময় ফেব্রুয়ারির তুলনায় এই সংখ্যা বেড়েছে ১৫০ শতাংশ, যখন ত্রাণ প্রবেশ তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।

সংস্থার মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক এদুয়ার্দ বেইগবেদার বলেন, “এই বছরের শুরু থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৫০ দিনের ব্যবধানে ১৬,৭৩৬ জন শিশু অপুষ্টির জন্য চিকিৎসা পেয়েছে, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১২ জন শিশু আক্রান্ত হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “এই পরিস্থিতি পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য। শিশুদের জরুরি খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পুষ্টি সহায়তা পৌঁছাতে না দেওয়ার কারণে এমন ভয়াবহতা ঘটছে। এটি সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট এবং এর কারণে অসংখ্য প্রাণ হারাচ্ছে। ইসরায়েলের উচিত অবিলম্বে সব সীমান্ত খুলে দিয়ে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া।”

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন