Friday, December 5, 2025

গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন দাবি


ছবিঃ গাজা সিটিতে ইসরায়েলের আকাশ ও স্থল হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে হাঁটছে ফিলিস্তিনিরা, ১১ নভেম্বর ২০২৫ (সংগৃহীত । আল জাজিরা । জেহাদ আলশরাফি/এপি ছবি)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN 

গাজায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) সমর্থন চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের খসড়া প্রস্তাব সমর্থন না পেলে ফিলিস্তিনিদের জন্য “গুরুতর পরিণতি” ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানের পরপরই রাশিয়া পরিষদের সামনে নিজস্ব একটি পাল্টা প্রস্তাব পেশ করেছে, যা ওয়াশিংটনের পরিকল্পনাকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন জানায়, তাদের প্রস্তাব নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বা বিতর্ক বাড়ানোর যেকোনো প্রচেষ্টা গাজাবাসীর জন্য “এড়ানো সম্ভব এমন বাস্তব ঝুঁকি” তৈরি করবে—বিশেষত যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেলে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র খসড়া প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের কাছে পাঠায়। খসড়া অনুযায়ী, গাজায় একটি অন্তর্বর্তী ‘বোর্ড অব পিস’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে এবং এর নেতৃত্বে থাকবেন ট্রাম্প।

খসড়ায় আরও রয়েছে—একটি আন্তর্জাতিক “ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)” গঠনের অনুমোদন। এই বাহিনী গাজায় অস্ত্রবিহীনকরণ, সীমান্ত নিরাপত্তা ও মানবিক করিডোর সুরক্ষায় কাজ করবে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, কাতার, তুরkiye ও আজারবাইজানের সঙ্গে এই বাহিনীতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে হামাসের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষের আশঙ্কায় অনেক দেশ এখনও দ্বিধায় রয়েছে। প্রস্তাবিত ২০ হাজার সদস্যের বাহিনীতে মার্কিন সেনা থাকবে না বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

নতুন খসড়ায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, “প্যালেস্টাইনি কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সংস্কার সম্পন্ন করলে রাষ্ট্র গঠনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হতে পারে।”

এছাড়া ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে “রাজনৈতিক সমঝোতার পথরেখা” তৈরির জন্য যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করবে বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, প্রস্তাবটি গ্রহণের বিষয়ে তিনি আশাবাদী। তবে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এখনও প্রশ্ন রয়েছে—

  • বোর্ড অব পিসের ওপর কোন দেশ নজরদারি করবে?

  • প্যালেস্টাইনি কর্তৃপক্ষ কী ভূমিকা পাবে?

  • আইএসএফের সুনির্দিষ্ট অধিকার-দায়িত্ব কী হবে?

এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাশিয়া নিজস্ব পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের দাবি, “টেকসই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদকে গ্রহণযোগ্য ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিতে হবে।”

৮ অক্টোবর ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে ইসরায়েল ও হামাস তার প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে। দুই বছরের ধ্বংসাত্মক সংঘাতে গাজায় নিহত হয়েছে ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ—এমনটাই বলছে বিভিন্ন প্রতিবেদন। যুদ্ধবিরতিতে বন্দি বিনিময়, সীমিত সেনা প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তবে যুদ্ধবিরতি বজায় থাকলেও ইসরায়েল প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে, যাতে বহু প্রাণহানি ঘটছে।

বর্তমান যুদ্ধবিরতিকে “অত্যন্ত নাজুক” উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাষায়, “মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির পথ তৈরি করার এটি একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।”

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন