- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
দক্ষিণ কোরিয়ার এক বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন’-এর আগমনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা নতুন করে বাড়িয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নো কুয়াং চোল কঠোর ভাষায় বলেছেন, পিয়ংইয়ং তার শত্রুদের বিরুদ্ধে “আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ” নেবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ-র (KCNA) এক প্রতিবেদনে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “আমরা শক্তির জোরে নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষার নীতির ভিত্তিতে শত্রুদের হুমকির বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখাবো।”
নো কুয়াং চোল আরও বলেন, “উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার পরিধি লঙ্ঘন করে এমন সব হুমকি সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে এবং প্রয়োজনীয় উপায়ে মোকাবিলা করা হবে।”
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য আসে একদিন পর, যখন উত্তর কোরিয়া পূর্ব উপকূলের সাগরে একটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘটনাটি ঘটে এমন সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার আট নাগরিক ও দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধের অর্থপাচারের অভিযোগে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের সফর এবং দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের যৌথ সীমান্ত পরিদর্শনের প্রতিক্রিয়াতেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, “ওয়াশিংটন ও সিউল তাদের পারমাণবিক ও প্রচলিত অস্ত্রশক্তিকে একীভূত করার ষড়যন্ত্র করছে।”
কেসিএনএ জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার এই মন্তব্য করেন দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক নিরাপত্তা পরামর্শ বৈঠক (SCM) এবং বুসান বন্দরে মার্কিন পঞ্চম ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের আগমনের প্রতিক্রিয়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই রণতরী আগমন মিলে গেছে “ফ্রিডম ফ্ল্যাগ” নামে বৃহৎ যৌথ সামরিক মহড়ার সঙ্গে, যেখানে অংশ নিচ্ছে মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার হাজারো সেনা।
ওয়াশিংটনে এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই উৎক্ষেপণ আমাদের বাহিনী বা মিত্রদের জন্য তাৎক্ষণিক হুমকি নয়, তবে এটি উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ডের অস্থিতিশীল প্রভাবের স্পষ্ট উদাহরণ।”
অন্যদিকে, পিয়ংইয়ং মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অসামরিক সীমান্ত অঞ্চল (DMZ) সফরকে “শত্রুতার প্রকাশ্য ও ইচ্ছাকৃত প্রদর্শন” বলে উল্লেখ করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন রণতরীর উপস্থিতি এবং সাম্প্রতিক মহড়াগুলোকে উত্তর কোরিয়া তার নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখছে, যা আগামী দিনে উপদ্বীপের উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে।