- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে।
রবিবার স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ৩০ মিনিটের কাছাকাছি) দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই-শরিফের কাছাকাছি ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.৩ এবং এর উৎসস্থল ছিল ভূ-পৃষ্ঠের ২৮ কিলোমিটার গভীরে।
তালেবান সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩২০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপে আরও অনেকে আটকা পড়ে থাকতে পারেন।
বালখ প্রদেশের তালেবান মুখপাত্র হাজি জায়েদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, মাজার-ই-শরিফের দক্ষিণে শোলগারা জেলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “বেশিরভাগ আহত হয়েছেন উঁচু ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ার সময়।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, ভূমিকম্পের সময় অনেক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন, কারণ তারা আশঙ্কা করেছিলেন ভবনগুলো ধসে পড়বে।
ভূমিকম্পের পর দেশজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান থেকে আসা বিদ্যুৎ সংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাজধানী কাবুলসহ বহু এলাকায় অন্ধকার নেমে আসে।
এছাড়া ঐতিহাসিক ব্লু মসজিদেও আংশিক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ১৫শ শতকে নির্মিত এই মসজিদটি শিয়া মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র, কারণ এটি হযরত আলির সমাধিস্থল বলে বিশ্বাস করা হয়।
কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান জানিয়েছেন, “পুলিশ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে।”
মাজার-ই-শরিফ সংলগ্ন সামাঙ্গান প্রদেশেও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে পাহাড়ি এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্ধারকারীরা এখনো সব গ্রামে পৌঁছাতে পারেননি।
এর আগে আগস্ট মাসেও আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। দেশটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক ফল্টলাইনের সংযোগস্থল বিদ্যমান।
বিশ্লেষকদের মতে, দুর্বল অবকাঠামো, মাটির ঘরবাড়ি ও যোগাযোগব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা আফগানিস্তানে এমন দুর্যোগ মোকাবিলাকে আরও কঠিন করে তুলছে।