- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই প্রস্তাবে হামাস গাজার প্রশাসনের দায়িত্ব ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের হাতে তুলে দিতে এবং ইসরায়েলের হাতে আটক সব বন্দীকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে।
তবে হামাসের এই প্রতিক্রিয়াতে গোষ্ঠীর নিরস্ত্রীকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই, যা ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান দাবি। হামাস জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে শান্তি আলোচনায় 'অবিলম্বে প্রবেশ করতে' প্রস্তুত।
হামাসের এই আংশিক সম্মতি গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা তৈরি করায় বিশ্বজুড়ে আশার সঞ্চার হয়েছে। যদিও কিছু মূল অমীমাংসিত বিষয় এখনও রয়ে গেছে।
এদিকে, ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। আজ শনিবার ভোরে গাজা সিটির পশ্চিমে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় সাহায্যপ্রার্থীসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
যদিও ইসরায়েলি হামলা চলছে, ট্রাম্পের শান্তি চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্রীয় গাজায় আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। গাজা সিটির বাস্তুচ্যুত ফাদল আল-দেবস (৫২) এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'এটা আমাদের জন্য দারুণ খবর। এটি সঠিক সিদ্ধান্ত, যদিও এটি দুই বছরের সংগ্রাম, হত্যা, যুদ্ধ ও ধ্বংসের পর এসেছে।'
ট্রাম্পের ২০-দফা পরিকল্পনায় হামাসের আংশিক সম্মতিকে মধ্যস্থতাকারীরাসহ বিশ্ব নেতারা আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছেন। তবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় এখনও উদ্বেগ রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধের সমাপ্তি ট্রাম্প কীভাবে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে এগোবেন, তার ওপর নির্ভর করছে।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চরম বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। অক্সফামের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মানবিক সমন্বয়কারী রুথ জেমস জানিয়েছেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো বিপুল সংখ্যক রোগীর চাপে জর্জরিত এবং মৌলিক চিকিৎসা সামগ্রীর চরম ঘাটতি রয়েছে। অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ও গর্ভবতী নারীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৬৫ জন আহত হয়েছেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা ৬৭,০৭৪ জনে পৌঁছেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজার হাজার লাশের কারণে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।