- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | PNN
ওয়াশিংটনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সফরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মেজর নন-ন্যাটো অ্যালাই’ বা প্রধান অ-ন্যাটো মিত্রের মর্যাদা প্রদান করেছেন। হোয়াইট হাউসে এক আনুষ্ঠানিক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প বলেন, মার্কিন–সৌদি সামরিক সহযোগিতা “আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও শক্তিশালী পর্যায়ে” পৌঁছাবে। এই মর্যাদা পেলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদাররা বিভিন্ন সামরিক–অর্থনৈতিক সুবিধা পায়, যদিও এতে কোনো প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি বাধ্যতামূলক নয়।
সফরে দুই দেশ একটি নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো এবং সৌদি আরবে মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্পের কার্যক্রম আরও সহজ করা হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান সরবরাহে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। রিয়াদ প্রায় ৪৮টি যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি ৩০০টি মার্কিন ট্যাঙ্ক কেনার ঘোষণাও দিয়েছে সৌদি সরকার।
তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের সামরিক ‘গুণগত আধিপত্য’—যা মার্কিন আইনে সুরক্ষিত—নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলই ছিল মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র এফ-৩৫ ব্যবহারকারী দেশ।
ইসরায়েলের আপত্তির প্রসঙ্গ টেনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, দুই দেশই যুক্তরাষ্ট্রের “বিশ্বস্ত মিত্র” এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার রাখে। যদিও ইসরায়েল চাইছিল সৌদি আরব কম সক্ষমতাসম্পন্ন যোদ্ধা বিমান পাক, ট্রাম্পের মতে “উভয় দেশই সেরা প্রযুক্তি পাওয়ার যোগ্য”।
হোয়াইট হাউসের সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরবের ঘোষিত প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ যাবে এফ-৩৫ ক্রয় ব্যয়ে।
দুই দেশ বেসামরিক পারমাণবিক জ্বালানি নিয়ে আলোচনারও সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। নতুন এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি জ্বালানি অংশীদারিত্বকে দীর্ঘমেয়াদে আরও সুদৃঢ় করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিয়ে আলোচনাও ওঠে বৈঠকে। তবে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান স্পষ্টভাবে জানান—আগে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের দিকে “বিশ্বাসযোগ্য, সুনিশ্চিত পথ” তৈরি না হলে রিয়াদ আব্রাহাম অ্যাকর্ডে যোগ দেবে না।
তিনি বলেন, “আমরা আলোচনায় প্রস্তুত, কিন্তু দুই রাষ্ট্র সমাধানের বাস্তব অগ্রগতি ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেব না।”